তবে দিনের শেষে আরও চওড়া হাসি নিয়ে সাজঘরে যেতে পারতেন মুমিনুল-মুশফিকরা। যদিও তা আর হয়নি। শেষ দিকে নতুন বলে মনোযোগ হারিয়ে বসেন সেঞ্চুরির পথে থাকা মুশফিকুর রহিম। লাকমালের বলে গ্লাভসবন্দি হন ৯২ রানে। তার ১৯২ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার। মুশফিক বিদায় নেওয়ার আগে অবশ্য গড়ে দিয়ে গেছেন তৃতীয় রেকর্ড জুটি। এই জুটিতে এসেছে ২৩৬ রান। লাকমালের পরের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লিটন দাস। রানের খাতা খোলার আগেই তার স্টাম্প উপড়ে দেন লঙ্কান পেসার।
টাইগারদের এমন দিনে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন মুমিনুল হক। তার দাপুটে সেঞ্চুরিতে পাত্তাই পায়নি লঙ্কানদের বোলিং। অপরাজিত আছেন ১৭৫ রানে।
অথচ দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও ৭৭ রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন মুমিনুল। পরের তিন ইনিংসে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। অবশেষে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। তার ব্যাটে ভর করেই বিশাল সংগ্রহের পথে বাংলাদেশ। তার সঙ্গী হিসেবে দিন শেষ করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ক্রিজে আছেন ৯ রানে। এর আগে দ্বিতীয় সেশন নির্বিঘ্নেই পার করে মুশফিক-মুমিনুল জুটি। এই জুটিই লঙ্কানদের শাসন করে গড়ে দিয়েছে বিশাল ইনিংসের মঞ্চ।
অবশ্য মূল ভিত্তিটা গড়ে দিয়েছেন দুই ওপেনার তামিম ও ইমরুল কায়েস। ১০ ইনিংস পর ওপেনিংয়ে ৫০ এর বেশি রানের জুটি গড়েছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে শুরুটাও দারুণ করেছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস।
টস জিতে খেলতে নামলে ধীরে ধীরে লম্বা জুটি গড়েন বাংলাদেশের এই দুই ওপেনার। স্পিন সহায়ক চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিনা উইকেটে পার করে ৫০ রান। তামিম ইকবাল মাত্র ৪৬ বলে দেখা পান হাফসেঞ্চুরির। ১৪.১ ওভারে একটি রান নিয়ে পূরণ করেন হাফসেঞ্চুরি।
এই জুটিতেই চিন্তার ভাঁজ পড়তে থাকে লঙ্কান শিবিরে। জুটি ভাঙতে ১৩ তম ওভারে অভিজ্ঞ হেরাথকে আনান অধিনায়ক চান্ডিমাল। হেরাথ না পারলেও পেরেরা এনে দেন সাফল্য। ১৬তম ওভারে দিলুরুয়ান পেরেরার স্পিনে পরাস্ত হন তামিম। পা বাড়িয়ে খেলার চেষ্টা করলেও ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল আঘাত করে স্টাম্পে। ৫৩ বলে তামিম ফিরে যান ৫২ রানে। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও একটি ছয়।
উল্টো দিকে সাবধান থেকেই খেলছিলেন ইমরুল কায়েস। ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন হাফসেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজের একটু আগেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পা দেন। সান্দাকানের স্পিনে ৪০ রানে ফেরেন ইমরুল। তার ৭৫ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার।
তামিমের মঞ্চ গড়ে দেওয়া ফিফটিতে দ্রুতগতিতে দলীয় শত রান তুলে নেন ইমরুল ও মুমিনুল। এই জুটিতে আসে ৪৮ রান। আগেরটিতে আসে ৭২ রান। বিরতির আগে সান্দাকানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ইমরুল। তবে রিভিউ নিলে নির্ঘাত বেঁচে যেতেন এই ওপেনার। কিন্তু সঙ্গী মুমিনুলের সঙ্গে আলোচনা সেরে রিভিউ না নিয়ে সাজঘরে ফেরেন বাঁ হাতি ওপেনার।